জুয়া

Roy Aishwarjyo
2 min readSep 28, 2020

--

Image collected

অথচ দাম দেবার আগেই কিছু জিনিসের দাম যেন হারিয়ে যায়। নোহান একা একা ভাবতে থাকে। ডিমলাইটের আলোয় হাতে থাকা চকচকে নাইফটা তুলে ধরে । এই গল্পটা কোনো এক রোমহর্ষক সুইসাইড এটেম্পট হতে পারতো। হতে পারতো প্রেমিকার সাথে বিচ্ছেদের আন্দোলন। কিন্তু সব ছাপিয়ে নোহানের মাথায় চলে আসে একের পর এক নোংরা ভাবনাগুলো।

দিনের পর দিন নিজেকে গড়ে তুলবার আশায় যে নোহান সব করেছে, চায়ের আড্ডায়, বিড়ির ধোয়ায় যাকে সবসময় খুঁজে পাওয়া যেতো সেই নোহানকে দেখে নোহান নিজেই অবাক হয়ে যায়। আনিকাকে একটা ফোন দেয় নোহান। ওপাশে ব্লক করে রাখা নাম্বারে কেউ উত্তর দিয়ে উঠেনা। নোহান ঘড়ি দেখে। তিনটা। তিনটা এক, তিনটা দুই, তিনটা তিন।

সময় আর কাটেনা। বিজনেস আইডিয়ার মতোই সময়টা যেন থমকে যায় নোহানের জন্য। আনিকা চলে গেলো, কেন গেলো কিছু জানিয়ে গেলোনা। নোহানের সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই কেউ আনিকাকে ভুলভাল বুঝিয়েছে। আনিকার সন্দেহ নেই যে সে ভুল কিছু করেছে কিনা। আনিকা জানে আজ যে ছেলে নিজেকে সামলাতে পারছেনা, যে ছেলে নিজের বাইরে দুনিয়ার সব কিছুকে তুচ্ছ ভাবে, তার জন্য অপেক্ষা করা যায়না। আনিকা তাই ফিরে গিয়েছিল তার রুটিনবাঁধা জীবনে। নোহান যেতে পারেনি। অথবা যেতে চায়নি। শিক্ষা দেবার সুযোগ খুঁজে চলেছে।

জীবন একটা জুয়া খেলা। আর সেই খেলায় হারাটা নোহানের হয়ে উঠেনি কখনো। স্টার্ট আপ টা এগোচ্ছেনা আর এদিকে আনিকাকেও বাগে পাওয়া যাচ্ছেনা। নোহান হালকা আচড়ে হাতে দাগ কাটে। খুব বেশি গভীরে যায়না।

বন্ধু রাহাত সাথেই দাঁড়িয়ে থাকে।

“সাবাস বন্ধু। কাল হেডলাইনে শুধু তুই থাকবি আর থাকবে আমাদের স্টার্ট আপের নাম। লোকের সিমপ্যাথি পাবি। মানুষ বলবে ট্যালেন্ট এর দাম না দেওয়ায় এটেম্পট নিয়েছিস। আনিকা হয়তো গিলটি ফিল করতে পারে। কে জানে আবার হয়তো এই সুযোগে ফিরেও আসতে পারে। হাহাহা। আরে দেখিস মামা, আস্তে কাটিস। এক্টিং করতে গিয়ে মরেই যাসনা আবার ।”

নোহান উত্তর দেয়না। রাহাতের হাত থেকে পোটলা টা হাতে নিয়ে গন্ধ শুকে। ওর মাথা ঝিমঝিম করে।

ও আরেকবার চুমুক দেয়। এক গ্লাস ব্যর্থতা আর পুরুষত্বের আমেজে ডুবিয়ে দেয় নিজেকে।

--

--

Roy Aishwarjyo

A Computer Science and Engineering student. Interested in research writing, business analytics, project management, content writing and editing.